এক সরকারি কর্মকর্তার স্কুলপড়ুয়া কন্যা স্কুলের প্রোগ্রামে নৃত্য পরিবেশন করে। কন্যার পিতা সেই ভিডিও ফেইসবুকে আপলোড করলে সহমত ভাই/বোনের দলে কমেন্টস করতে লাগল -"আলহামদুলিল্লাহ" "মাশাল্লাহ সুন্দর হয়েছে" "এত সুন্দর নাচে!" "অসাধারণ" তবে বেশিরভার কমেন্টই আলহামদুলিল্লাহ ও মাশাল্লাহ টাইপের। . কন্যার পিতা সব কমেন্টে লাভ রিএক্ট দিয়ে যাচ্ছিলেন। এক আপু একটা কমেন্ট করেছেন "প্র্যাক্টিস করলে আরেকটু ভালো হতো!" . কন্যার পিতা সেই কমেন্টের উত্তরে বললেন "সামনে আরো ভালো করার চেস্টা করব ইনশাল্লাহ!" সেই কমেন্টে ৭/৮ টা লাভ রিএক্ট পড়ল। . কোথা থেকে এক লোক উড়ে এসে জুড়ে বসে কমেন্ট করল "কন্যাকে এভাবে নাচ না শিখিয়ে তাকে কোরান শিক্ষা দিন!" এরপরে থমথমে নীরবতা শুরু হলো। নীরবতা ভাঙ্গল এক আপু। তিনি এসে এই কমেন্টে এংরি ইমো দিলেন। তারপরে রিপ্লাই দিলেন "কত নীচু মানসিকতার হলে মানুষ এমন কমেন্ট করে!" এক ভাইয়া কমেন্টের রিপ্লাই দিলেন "আমার জানামতে 'ভাইয়া' (কন্যার পিতা) কোরান পড়তে জানেন, মেয়েকে হুজুর রেখে কোরান পড়ান।" কন্যার পিতা মনে হয় এবার রিপ্লাই দেয়ার সাহস পেলেন। তিনি রিপ্লাই দিলেন "আমার মেয়েকে আমি কীভাবে কী শিক্ষা দিব সেটা আমার বিষয়। আমাকে এসব শিক্ষা দিতে আসবেন না।" . কন্যার পিতার এহেন কমেন্ট দেখে বাকী লোকজন সেই কমেন্টারের উপরে ঝাপিয়ে পড়ল। যে যেভাবে পারে কমেন্টের মাধ্যমে লোকটিকে পঁচাতে শুরু করল। কিছুক্ষণ পরে সেই লোক কমেন্ট ডিলিট করলেন অথবা পোস্টের 'সৌন্দর্যের' স্বার্থে সেই কমেন্ট ডিলিট করা হলো। ---- শেষ যামানার একটা চিহ্ন হলো মানুষ মানুষকে জাহান্নামের পথে ডাকবে। ---- দাইয়ুস সম্পর্কে রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘ঐ ব্যক্তিকে দাইয়ুস বলা হয় যে তার পরিবারের অশ্লীলতা ও কুকর্মকে মেনে নেয়।’ (মুসনাদ আহমদ, নাসাঈ) অর্থাৎ যে ব্যক্তি তার স্ত্রী-কন্যা সহ পরিবারের অধিনস্ত অন্য সদস্যদের বেপর্দা চলাফেরা ও অশ্লীল কাজকর্ম বা ব্যভিচারকে স্বাভাবিকভাবে গ্রহণ করে অথবা কোনোরূপ বাধা না দিয়ে মৌনতা অবলম্বন করে। . ইমাম যাহাবী (রহ.) বলেছেন, ‘দাইয়ূস’ সে ব্যক্তি, যে তার স্ত্রীর ফাহেশা কাজ সম্পর্কে অবগত। কিন্তু তার প্রতি ভালোবাসার কারণে এ ব্যাপারে সে উদাসীন থাকে। অথবা তার উপর তার স্ত্রীর বৃহৎ ঋণ বা মোহরানার ভয়ে কিংবা ছোট ছেলেমেয়েদের কারণে সে স্ত্রীকে কিছুই বলে না এবং যার আত্ম-সম্মানবোধ বলতে কিছুই নেই’। (যাহাবী, কিতাবুল কাবায়ের- ১/৫০) হাদিসটির ব্যাখ্যা বিস্তারিত। তবে এখানে মূল বিষয় হল ফাহেশা বা অশ্লীলতা। যে তার নিজ পরিবারে ইসলামী অনুশাসন মেনে চলতে শিথিলতা প্রদর্শন করে, স্ত্রী-কন্যাদেরকে পর্দার আদেশ করে না, পর্দাপালনে উৎসাহিতও করে না, ঘরে নিষিদ্ধ গান-বাদ্য দিব্যি চলে, এর কোনো প্রতিবাদ করে না; এ রকম সকল শরীয়াহ বিরোধী অশ্লীলতাকে মেনে নেয় – সে ব্যক্তি `দাইয়ুস`। এ ব্যক্তি সম্পর্কে রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘দাইয়ুস কখনোই জান্নাতে প্রবেশ করবে না।’ (নাসায়ীঃ ২৫৬২, মিশকাতঃ ৩৬৫৫) রাসূলুল্লাহ (সা.) আরো বলেছেন, ‘জেনে রাখো, তোমাদের প্রত্যেকেই দায়িত্বশীল এবং নিজ নিজ অধীনস্থের বিষয়ে তোমাদের প্রত্যেকেই জিজ্ঞাসিত হবে। . অতঃপর দেশের শাসক জনগণের উপর দায়িত্বশীল। সে তার দায়িত্বশীলতার ব্যাপারে জিজ্ঞাসিত হবে। পুরুষ তার পরিবারের উপর দায়িত্বশীল। অতএব, সে তার দায়িত্বশীলতার বিষয়ে জিজ্ঞাসিত হবে। স্ত্রী তার স্বামীগৃহের উপর দায়িত্বশীলা। কাজেই সে তার দায়িত্বশীলতা বিষয়ে জিজ্ঞাসিতা হবে। দাস তার প্রভুর সম্পদের দায়িত্বশীল। সেও এ ব্যাপারে জিজ্ঞাসিত হবে। তোমরা প্রত্যেকেই দায়িত্বশীল এবং প্রত্যেকেই নিজ নিজ অধীনস্থের দায়িত্বশীলতার ব্যাপারে জিজ্ঞাসিত হবে।’ (বুখারী : ৮৯৩; মুসলিম : ১৮২৯) . মহান আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআলা বলেছেন, ‘হে বিশ্বাসী বান্দাগন, তোমরা নিজেদেরকে এবং তোমাদের পরিবার-পরিজনকে সেই আগুণ থেকে রক্ষা কর, যার ইন্ধন হবে মানুষ ও পাথর, যাতে নিয়োজিত আছে পাষাণ হৃদয় ও কঠোরস্বভাবের ফেরেশতাগণ। তারা আল্লাহ তাআলা যা আদেশ করেন, তা অমান্য করে না এবং তারা তা-ই করে যা করতে তাদের আদেশ করা হয়।” (সূরা তাহরিম-৬) . দাইয়ুস ও এর পরিণতি সম্পর্কে রাসূলুল্লাহ (সা.) এর হাদিসের ভাষ্য তো স্পষ্ট। এবং আল্লাহর রাসূল বলেও দিলেন আমরা প্রত্যেকেই দায়িত্বশীল এবং অধীনস্থদের সম্পর্কে আমরা অবশ্যই জিজ্ঞাসিত হবো।
এক সরকারি কর্মকর্তার স্কুলপড়ুয়া কন্যা স্কুলের প্রোগ্রামে নৃত্য পরিবেশন করে। কন্যার পিতা সেই ভিডিও ফেইসবুকে আপলোড করলে সহমত ভাই/বোনের দলে কমেন্টস করতে লাগল -"আলহামদুলিল্লাহ" "মাশাল্লাহ সুন্দর হয়েছে" "এত সুন্দর নাচে!" "অসাধারণ" তবে বেশিরভার কমেন্টই আলহামদুলিল্লাহ ও মাশাল্লাহ টাইপের। . কন্যার পিতা সব কমেন্টে লাভ রিএক্ট দিয়ে যাচ্ছিলেন। এক আপু একটা কমেন্ট করেছেন "প্র্যাক্টিস করলে আরেকটু ভালো হতো!" . কন্যার পিতা সেই কমেন্টের উত্তরে বললেন "সামনে আরো ভালো করার চেস্টা করব ইনশাল্লাহ!" সেই কমেন্টে ৭/৮ টা লাভ রিএক্ট পড়ল। . কোথা থেকে এক লোক উড়ে এসে জুড়ে বসে কমেন্ট করল "কন্যাকে এভাবে নাচ না শিখিয়ে তাকে কোরান শিক্ষা দিন!" এরপরে থমথমে নীরবতা শুরু হলো। নীরবতা ভাঙ্গল এক আপু। তিনি এসে এই কমেন্টে এংরি ইমো দিলেন। তারপরে রিপ্লাই দিলেন "কত নীচু মানসিকতার হলে মানুষ এমন কমেন্ট করে!" এক ভাইয়া কমেন্টের রিপ্লাই দিলেন "আমার জানামতে 'ভাইয়া' (কন্যার পিতা) কোরান পড়তে জানেন, মেয়েকে হুজুর রেখে কোরান পড়ান।" কন্যার পিতা মনে হয় এবার রিপ্লাই দেয়ার সাহস পেলেন। তিনি রিপ্লাই দিলেন "আমার মেয়েকে আমি কীভাবে কী শিক্ষা দিব সেটা আমার বিষয়। আমাকে এসব শিক্ষা দিতে আসবেন না।" . কন্যার পিতার এহেন কমেন্ট দেখে বাকী লোকজন সেই কমেন্টারের উপরে ঝাপিয়ে পড়ল। যে যেভাবে পারে কমেন্টের মাধ্যমে লোকটিকে পঁচাতে শুরু করল। কিছুক্ষণ পরে সেই লোক কমেন্ট ডিলিট করলেন অথবা পোস্টের 'সৌন্দর্যের' স্বার্থে সেই কমেন্ট ডিলিট করা হলো। ---- শেষ যামানার একটা চিহ্ন হলো মানুষ মানুষকে জাহান্নামের পথে ডাকবে। ---- দাইয়ুস সম্পর্কে রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘ঐ ব্যক্তিকে দাইয়ুস বলা হয় যে তার পরিবারের অশ্লীলতা ও কুকর্মকে মেনে নেয়।’ (মুসনাদ আহমদ, নাসাঈ) অর্থাৎ যে ব্যক্তি তার স্ত্রী-কন্যা সহ পরিবারের অধিনস্ত অন্য সদস্যদের বেপর্দা চলাফেরা ও অশ্লীল কাজকর্ম বা ব্যভিচারকে স্বাভাবিকভাবে গ্রহণ করে অথবা কোনোরূপ বাধা না দিয়ে মৌনতা অবলম্বন করে। . ইমাম যাহাবী (রহ.) বলেছেন, ‘দাইয়ূস’ সে ব্যক্তি, যে তার স্ত্রীর ফাহেশা কাজ সম্পর্কে অবগত। কিন্তু তার প্রতি ভালোবাসার কারণে এ ব্যাপারে সে উদাসীন থাকে। অথবা তার উপর তার স্ত্রীর বৃহৎ ঋণ বা মোহরানার ভয়ে কিংবা ছোট ছেলেমেয়েদের কারণে সে স্ত্রীকে কিছুই বলে না এবং যার আত্ম-সম্মানবোধ বলতে কিছুই নেই’। (যাহাবী, কিতাবুল কাবায়ের- ১/৫০) হাদিসটির ব্যাখ্যা বিস্তারিত। তবে এখানে মূল বিষয় হল ফাহেশা বা অশ্লীলতা। যে তার নিজ পরিবারে ইসলামী অনুশাসন মেনে চলতে শিথিলতা প্রদর্শন করে, স্ত্রী-কন্যাদেরকে পর্দার আদেশ করে না, পর্দাপালনে উৎসাহিতও করে না, ঘরে নিষিদ্ধ গান-বাদ্য দিব্যি চলে, এর কোনো প্রতিবাদ করে না; এ রকম সকল শরীয়াহ বিরোধী অশ্লীলতাকে মেনে নেয় – সে ব্যক্তি `দাইয়ুস`। এ ব্যক্তি সম্পর্কে রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘দাইয়ুস কখনোই জান্নাতে প্রবেশ করবে না।’ (নাসায়ীঃ ২৫৬২, মিশকাতঃ ৩৬৫৫) রাসূলুল্লাহ (সা.) আরো বলেছেন, ‘জেনে রাখো, তোমাদের প্রত্যেকেই দায়িত্বশীল এবং নিজ নিজ অধীনস্থের বিষয়ে তোমাদের প্রত্যেকেই জিজ্ঞাসিত হবে। . অতঃপর দেশের শাসক জনগণের উপর দায়িত্বশীল। সে তার দায়িত্বশীলতার ব্যাপারে জিজ্ঞাসিত হবে। পুরুষ তার পরিবারের উপর দায়িত্বশীল। অতএব, সে তার দায়িত্বশীলতার বিষয়ে জিজ্ঞাসিত হবে। স্ত্রী তার স্বামীগৃহের উপর দায়িত্বশীলা। কাজেই সে তার দায়িত্বশীলতা বিষয়ে জিজ্ঞাসিতা হবে। দাস তার প্রভুর সম্পদের দায়িত্বশীল। সেও এ ব্যাপারে জিজ্ঞাসিত হবে। তোমরা প্রত্যেকেই দায়িত্বশীল এবং প্রত্যেকেই নিজ নিজ অধীনস্থের দায়িত্বশীলতার ব্যাপারে জিজ্ঞাসিত হবে।’ (বুখারী : ৮৯৩; মুসলিম : ১৮২৯) . মহান আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআলা বলেছেন, ‘হে বিশ্বাসী বান্দাগন, তোমরা নিজেদেরকে এবং তোমাদের পরিবার-পরিজনকে সেই আগুণ থেকে রক্ষা কর, যার ইন্ধন হবে মানুষ ও পাথর, যাতে নিয়োজিত আছে পাষাণ হৃদয় ও কঠোরস্বভাবের ফেরেশতাগণ। তারা আল্লাহ তাআলা যা আদেশ করেন, তা অমান্য করে না এবং তারা তা-ই করে যা করতে তাদের আদেশ করা হয়।” (সূরা তাহরিম-৬) . দাইয়ুস ও এর পরিণতি সম্পর্কে রাসূলুল্লাহ (সা.) এর হাদিসের ভাষ্য তো স্পষ্ট। এবং আল্লাহর রাসূল বলেও দিলেন আমরা প্রত্যেকেই দায়িত্বশীল এবং অধীনস্থদের সম্পর্কে আমরা অবশ্যই জিজ্ঞাসিত হবো।
মন্তব্যসমূহ